পটল এর উপকারিতা ও অপকারিতা
পটল বাংলাদেশে অনেক জনপ্রিয় একটি সবজি। পটলকে ইংরেজিতে ``Pointed Ground'' বলা হয়। পটল এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায়। তবে সাধারণত বাংলাদেশ, ভারত, এবং নেপালে সবথেকে বেশি পটল পাওয়া যায়। বাংলাদেশের মানুষ যেকোন তরকারির মধ্যে পটল খেতে পছন্দ করে। কারণ, পটল খেলে মানুষের শরীরে অনেক উপকার হয়।
পটল খেলে মানব দেহে অনেক পুষ্টির অভাব পূরণ হয়। পটলের মধ্যে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। তবে অনেকেই জানেন না পটল খেলে মানবদেহে কী ধরনের উপকার হয়। এছাড়াও পটল খেলে মানবদেহে কোন ধরণের ক্ষতি হবে কিনা এটাও অনেকেই জানেন না। তাই নিচে পটলের উপকারিতা, অপকারিতা এবং এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
পটলের পুষ্টিগুণ
পটল একটি পুষ্টিকর সবজি। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পটল রাখলে শরীরে অনেক পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়। পটলের মধ্যে যেসকল পুষ্টিগুণ রয়েছে তা নিচে উল্লেখ করা হলো:
- ক্যালোরি: পটল কম ক্যালোরিযুক্ত একটি সবজি যা ওজন নিয়ন্ত্রনে সহায়তা করে।
- ভিটামিন এ: পটলে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ রয়েছে যা চোখের জন্য খুবই উপকারি।
- ভিটামিন সি: এটি রোগ প্রতিরোধে অনেক সাহায্য করে এবং ত্বকের জন্য অনেক উপকারি।
- ভিটামিন বি: পটলে ভিটামিন বি গ্রুপের বিভিন্ন উপাদান যেমন (থায়ামিন ও রিবোফ্লাভিন) থাকার কারণে শরীরে শক্তি উৎপন্ন করতে সাহায্য করে।
এছাড়াও পটলের মধ্যে আরো অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যেমন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। একটি মানবদেহে এসকল পুষ্টিগুণের গুরুত্ব অপরিসীম।
পটল খেলে কি ওজন বাড়ে
সাধারণত পটল খেলে ওজন বাড়ার চান্স অনেক কম থাকে। এর কারণ হলো পটল কম ক্যালোরিযুক্ত এবং ফাইবার সমৃদ্ধ সবজি। পটল খেলে হজম শক্তি বাড়ে এবং পেট ভরা অনুভব করায়। ফলে বেশি খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। এছাড়াও পটল খেলে শরীরে বিপাকক্রিয়া বৃদ্ধি করতে পারে যা ওজন নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে। যারা ওজন কমাতে চান অথবা নিয়ন্ত্রনে রাখতে চান তারা নিয়মিত পটল খেতে পারেন।
পটল খেলে কি কি উপকার হয়
পটল খেলে মানবদেহে বিভিন্ন ধরণের উপকার হয়। পটলের মধ্যে থাকা সকল পুষ্টিগুণের কারণে মানবদেহে অনেক উপকার হয়। নিচে পটল খেলে কি কি উপকার হয় তা দেওয়া হলো:
- পটলে প্রচুর পরিমান ফাইবার থাকার কারণে হজম শক্তি বৃদ্ধি হয়।
- ভিটামিন সি এর কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- কম ক্যালোরির কারণে ওজন নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হয়।
- চোখের জন্য অনেক উপকারী।
- হৃদরোগের ঝুকি কমায়।
- ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রন করে।
- শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে।
- ত্বকের উজ্জলতা বাড়ায়।
পটল খেলে যেমন শরীরে অনেক উপকার হওয়ার পাশাপাশি এর অনেক ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। নিচে পটল খাওয়ার অপকারিতা উল্লেখ করা হলো।
পটলের অপকারিতা
পটল খাওয়া উপকারি হলেও শুধু পটল খেলে প্রয়োজনীয় অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি হতে পারে। পটল খেলে শরীরে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা হতে পারে। পটলের অপকারি দিকগুলো নিচে দেওয়া হলো:
- পুষ্টিহীনতা
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা
- এ্যালার্জি বা সংবেদনশীলতা
- অপরিষ্কার বা পোকাযুক্ত পটল খেলে শরীরে বিভিন্ন ধরণের ব্যাকটেরিয়া ঢুকতে পারে।
অতিরিক্ত পটল খেলে এই ধরণের সমস্যাগুলো হতে পারে। তাই আমাদের সব ধরণের সবজি খাওয়া উচিত। এতে স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
পটল এ কি ভিটামিন থাকে
স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি এমন অনেক ভিটামিন পটলের মধ্যে রয়েছে। তবে এর মধ্যে প্রধান তিনটি ভিটামিন হলো ভিটামিন- এ, ভিটামিন- বি, ও ভিটামিন- সি। ভিটামিন এ চোখের জন্য খুবই উপকারি।ভিটামিন বি শরীরে শক্তি উৎপন্ন করতে সাহায্য করে। এবং ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধে অনেক সাহায্য করে এবং ত্বকের জন্য অনেক উপকারি।
পটল পাতার রস খেলে কি হয়
পটল পাতার রস খেলে শরীরে বিভিন্ন ধরণের উপকার পাওয়া যায়। তবে পরিমান মতো অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এটি সেবন করতে হবে। পটরের রস সাধারণত বিভিন্ন ঔষধে ব্যাবহার করা হয়। পটল পাতার রস খেলে শরীরে যেসকল উপকার হয় তা হলো:
- পটল পাতার রস রক্তে সর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্ররে সহায়ক হতে পারে। এটি ডায়াবেটিকস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী।
- প্রাচীনকালে পটল পাতার রস জ্বর নিরাময়ের ঔষধ হিসেবে ব্যাবহার করা হতো। এটি জ্বর নিয়ন্ত্রনে অনেক সাহায্য করে।
- পটল পাতার রস পেটের অনেক সমস্যা সমাধান করে। যেমন, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, হজমের সমস্যা।
- পটল পাতার রস শরীরে বিভিন্ন ধরণের রোগ প্রতিরোধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
লেখকের মন্তব্য
আমরা দৈনন্দিন জীবনে যেসকল সবজি খায় তার মধ্যে পটল অনেক জনপ্রিয়। পটল অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সবজি। পটল খেলে মানবদেহে বিভিন্ন ধরণের উপকার হয় এবং অপকার হয়। অনেকেই জানেন না পটল খেলে কি উপকার ও অপকার হয়। এছাড়াও পটলে কি কি পুষ্টিগুন ও ভিটামিন রয়েছে এসকল বিষয়ে অনেকেই জানতে চান। তাই এই আর্টিকেলের মধ্যে পটলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
comment url